ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

করোনার যাবতীয়বিধি তুলে নিচ্ছে যুক্তরাজ্য

মহামারি করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরন ওমিক্রনের প্রভাবে সংক্রমণ-মৃত্যুতে ঊর্ধ্বগতি থাকলেও যুক্তরাজ্যে যাবতীয় কোভিডবিধি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ব্রিটিশ সরকার। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।


‘কোভিডের সঙ্গে বসবাস’ নীতির আওতায়ই পদক্ষেপটি গ্রহণ করছে ব্রিটেন সরকার। সরকারি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে যুক্তরাজ্যই হবে ইউরোপের প্রথম দেশ, যেখানে বাজার, গণপরিহন, কর্মস্থল ও অন্যান্য জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বাধাহীনভাবে যাতায়াত করতে পারবেন।


সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন বরিস জনসন। মূলত এর আগে সকালে বিবৃতির মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, আজকের দিনটি আমাদের ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন হিসেবে স্বীকৃত হবে। কারণ আজই আমরা ঘোষণা করতে যাচ্ছি যে, আমরা দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি কীভাবে, কোভিডের সঙ্গে কীভাবে বসবাস করা সম্ভব— তা শিখতে শুরু করেছি।


ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়ার একদিন পরই বিধিনিষেধ তুলে নিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। তবে রবিবার এক ভাষণে জনসন দেশবাসীকে করোনা বিধিনিষেধ সম্পর্কে পুরোপুরি উদাসীন না হয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যতখানি সতর্কতা মেনে চলা সম্ভব— তা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।


একই সঙ্গে যারা এখনো করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের ডোজ গ্রহণ করেননি, তাদেরকে দ্রুত টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


যুক্তরাজ্যে গত ২৮ দিনে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক লাখ ৬০ হাজারেরও অধিক মানুষ। করোনায় মৃত্যুর হিসেবে ইউরোপের রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে শীর্ষে আছে ব্রিটেন।


অবশ্য জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতেও বেশ সফল যুক্তরাজ্য। দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ভ্যাকসিনের দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন, ৮১ শতাংশ নিয়েছেন টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ।


সর্বশেষ পার্লামেন্ট অধিবেশনে বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপিরা বরিস জনসনকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।


সেই আহ্বানের জবাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, লকডাউন ও দীর্ঘ বিধিনিষেধের কারণে জাতীয় অর্থনীতির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি এরই মধ্যে হয়ে গেছে। এছাড়া করোনার চিকিৎসা বাবদও প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বিকল্প নেই।


পার্লামেন্টে বরিস জনসন বলেছিলেন, প্রতিমাসে কেবল করোনা টেস্টিং বাবদই সরকারের খরচ হচ্ছে ২ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে আমাদের অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে আমরা হয়ত খুব বেশিদিন এই নিয়ম আর চালু রাখতে পারব না।

ads

Our Facebook Page